প্রথম দেখা
  • হোম
  • সমসাময়িক
  • বিজ্ঞান
    • প্রযুক্তি
    • স্বাস্থ্য
    • অন্যান্য
  • পরিবেশ
    • সুন্দরবন
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • অন্যান্য
  • শিল্প সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • মুখোমুখি
    • অন্যান্য
  • মেলা ও উৎসব
    • কলকাতার উৎসব
    • অন্যান্য
  • ভ্রমণ
  • হেঁশেল
No Result
View All Result
Subscribe
bn Bengali▼
X
ar Arabicbn Bengalizh-CN Chinese (Simplified)nl Dutchen Englishfr Frenchde Germanit Italianpt Portugueseru Russianes Spanish
প্রথম দেখা
  • হোম
  • সমসাময়িক
  • বিজ্ঞান
    • প্রযুক্তি
    • স্বাস্থ্য
    • অন্যান্য
  • পরিবেশ
    • সুন্দরবন
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • অন্যান্য
  • শিল্প সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • মুখোমুখি
    • অন্যান্য
  • মেলা ও উৎসব
    • কলকাতার উৎসব
    • অন্যান্য
  • ভ্রমণ
  • হেঁশেল
No Result
View All Result
bn Bengali▼
X
ar Arabicbn Bengalizh-CN Chinese (Simplified)nl Dutchen Englishfr Frenchde Germanit Italianpt Portugueseru Russianes Spanish
প্রথম দেখা ওয়েব পোর্টাল
No Result
View All Result

Bike ride to Sikkim Gurudongmar বাইকে করে গুরুদংমার

Prothom Dekha Web by Prothom Dekha Web
June 17, 2022
156 8
1
185
SHARES
2.1k
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

প্রতিবেদন – শ্রীমন্ত দে

বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে রয়েছে তা তো আমরা সবাই জানি । কলকাতার গরমে বসে বসে ঘামতে ঘামতে হঠাৎ আমি আর আমার এক বন্ধু হিমাদ্রি ঠিক করলাম যে বাইকে করে গুরুদংমার ঘুরতে যাব।

কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেনে এবং তারপর ওখান থেকে রয়াল এনফিল্ড বাইক ভাড়া নিয়ে আমরা গুরুদংমার যাব। যেমন বলা তেমনি কাজ, মে মাসের 20 তারিখ বেরিয়ে পড়লাম শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে। সকালবেলায় ট্রেন ছিল আমরা শিলিগুড়িতে নামলাম রাত্রি সাড়ে দশটায়। রাতটা থাকলাম হোটেল মাউন্ট আমারা এন্ড স্পা তে। আগে থেকেই বুকিং করা ছিল পরের দিন সকালে বাইক কিরায়া নামের একটি বাইক ভাড়া দেওয়ার জায়গা সেখান থেকে আমরা দুজনের দুটি রয়াল এনফিল্ড বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম মানগান এর উদ্দেশ্যে। হেলমেট রাইডিং জ্যাকেট রাইডিং প্যান্ট এবং রাইডিং গ্লাভস ও জুতো আমরা আমাদের সাথেই নিয়ে এসেছিলাম।

শিলিগুড়ি থেকে প্রত্যেক বাইকে 10 লিটার করে তেল ভরে চলতে শুরু করলাম। শিলিগুড়ি শহরের মধ্যে থেকে একটু বেরিয়ে বাঁদিকে গেলেই শিলিগুড়ির সংরক্ষিত জঙ্গল। সেই রাস্তা ধরে সোজা যাওয়ার পর পাহাড়ের চড়াইয়ের রাস্তা শুরু হল। আমার বাইকে কোন সমস্যা হয়নি কিন্তু হিমাদ্রীর বাইকে শিলিগুড়ির জঙ্গলের রাস্তাটা থেকেই কিছু সমস্যা হতে শুরু করল। আমি সেটা বুঝতে পেরে মাঝরাস্তায় এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হিমাদ্রীর বাইকটা চালিয়ে দেখলাম। দেখলাম একদমই চালানোর যোগ্য নয়। কোনরকমে তাও আমরা উঠতে শুরু করলাম যেহেতু এই জায়গাটিতে কোন বাইক সারানোর দোকান ছিল না। সোজা উঠে এলাম এক জায়গায় সেটার নাম হচ্ছে মেল্লি। ওখানে আমরা একটি বাইক রিপেয়ার এর দোকানে গেলাম। দোকানে বলল অনেক কিছু প্রবলেম আছে বাইকটিতে আপনারা এটি নিয়ে উপরে উঠতে পারবেন না। হিমাদ্রি বললো ঠিক আছে একটু আমরা উপরের দিকে উঠে দেখি যদি একদমই বাইক চলতে না পারে তাহলে না হয় অন্য কোন ব্যবস্থা করা যাবে। তো আমরা কোনরকমে উঠে এলাম একটি জায়গায় যেটার নাম মাজিতার। মাজিতারে এসেই বাইকের সমস্যা আরও বেড়ে গেল তো আমি বাইক কিরায়ার দোকানে ফোন করলাম ওরা বলল যে ঠিক আছে আমরা একজনকে পাঠাচ্ছি আরও একটি ভালো কন্ডিশনের বাইক নিয়ে সে আসবে। আমাদের প্ল্যান একটু পিছিয়ে গেল কারন আমরা ঠিক করেছিলাম ওই দিনকেই আমরা সোজা মানগান বেরিয়ে যাব এবং আমরা থাকবো হচ্ছে থাঙ্গু ভ্যালিতে। যাই হোক আমরা মাজিতারে অপেক্ষা করলাম তিন-চার ঘণ্টা বাদে আরেকজন আসলো অন্য একটি বাইক নিয়ে। তখন সন্ধে হয়ে গেছে তো আমরা আর রাত্রে বাইক চালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিলাম না মাজিতারে এ একটি হোটেল যার নাম হচ্ছে হোটেল ইয়ারলাম সেখানে রাত্রিটা থেকে গেলাম। পরের দিন সকালে সাতটা নাগাদ সোজা বেরিয়ে পড়লাম মানগান এর উদ্দেশ্যে। দারুন সুন্দর চড়াই রাস্তা, রাস্তার বাঁক, প্রচুর ওয়াটার ক্রসিং পার করতে করতে এবং চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আমরা পৌঁছে গেলাম মানগান। পথে বৃষ্টি পেয়েছি আমাদের কাছে রেইনকোট ছিল আমরা সেগুলো পরে বাইক চালিয়েছি।

মানগানে একটি হোটেলে আমাদের থাকার কথা ছিল কিন্তু যেহেতু আমরা মাজিতারে রাত্রি কাটিয়েছি সেই জন্য দেরি হয়ে যাবে বলে আমরা মানগানে আর দাঁড়ালাম না ওইখানকার হোটেলে ঢুকে আমরা শুধু একটু ম্যাগি আর চা খেলাম। মানগানে পৌঁছে আরো কয়েকজনের সাথে দেখা হয়ে গেল যারা কলকাতা থেকে বাইক চালিয়ে সোজা গুরুদংমার যাচ্ছিল। তাদের সাথে আমরা একসাথে চলতে শুরু করলাম। এইখানে একটা জিনিস বলে রাখা ভালো যে মানগানে কিন্তু শেষ পেট্রোল পাম্প, আমরা আমাদের বাইকের ফুল ট্যাঙ্ক করে নিলাম এবং প্রত্যেকে একটি করে 5 লিটারের জারিকেন কিনেছিলাম তারমধ্যে পেট্রোল ভরে আর বাইকে বেঁধে নিয়েছিলাম।

যেতে যেতে আরো জোরে বৃষ্টি বাড়লো কোনরকমে পৌঁছে গেলাম লাচেন। ওখানে প্রথম চেক পোস্ট করল যেখানে আমরা নিজেদের পারমিট যেগুলি আগে থেকেই আমরা করিয়ে রেখে ছিলাম সেটি দেখালাম সেগুলি ওখানে স্ট্যাম্প করে আমাদেরকে আগে যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দিল। ওখানে একটি হোটেল আগে থেকেই বুক করা ছিল তো আমরা থাকলাম গিয়ে সেখানে। আর কলকাতা থেকে যারা এসেছে তাদেরও আমাদের হোটেলটির পাশেই আরেকটি জায়গায় হোটেলটি ছিল। যাইহোক পৌঁছে দেখলাম মাথা থেকে পা পর্যন্ত সবকিছুই ভিজে গেছে রেনকোট থাকা সত্বেও জুতো গ্লাভস রাইডিং জ্যাকেট রাইডিং প্যান্ট সবকিছুই জলে সপসপ করছে। তখনকার মত কোনরকমে সেগুলি ছেড়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম কিছু খাওয়ার উদ্দেশ্যে কারণ প্রচন্ড খিদে পেয়েছিল তো হোটেলটির পাশেই একটি দোকান ছিল সেখান থেকে আমরা ওয়াই ওয়াই খেলাম। তারপর হোটেলে ফিরে গিয়ে একটু বিশ্রাম নিলাম তখন সন্ধে হয়ে গেছে। এরপর আমি আর হিমাদ্রি চলে গেলাম সেই গ্রুপটির উদ্দেশ্যে যারা কলকাতা থেকে এসেছিল আর আমাদের পাশের হোটেলে ছিল তাদের সাথে গিয়ে দেখা করলাম একটু আড্ডা দিলাম আর এই লাচেন এর রাস্তায় একটু হেঁটে ঘুরলাম। তারপর আমাদের হোটেলে ফিরে এসে একটি ইস্ত্রি চাইলাম। আমার আর হিমাদ্রির যত জিনিস ভিজে গেছিল সেই গুলি কোন রকমে ইস্ত্রি দিয়ে শুকনো করার চেষ্টা করলাম। মোটামুটি সারারাত এই ভাবেই কাটল তারপরে অনেক রাত্রে ঘুমাতে গেলাম।

পরের দিন সকালে সাতটার সময় আমরা অর্থাৎ আমি হিমাদ্রি আর আরেকটি দল যারা এসেছিল কলকাতা থেকে তাদের সাথে আমরা সোজা বেরিয়ে পড়লাম গুরুদংমার এর উদ্দেশ্যে। ওই সময়ে আরও অনেক টুরিস্ট ভেহিকেল চারচাকা তারাও আমাদের সাথ দিল একসাথে সবাই মিলে গুরুদংমার এর উদ্দেশ্যে যেতে শুরু করলাম।

পাহাড়ের উপরে অজস্র বাঁক এবং ওয়াটার ক্রসিং পেরিয়ে আমরা সোজা যাচ্ছি তো যাচ্ছি। প্রথম চেক পয়েন্ট বা চেকপোস্ট সেটা পড়ল হচ্ছে ডোসা পয়েন্ট। যেটিকে বলা হয় ওয়ার্ল্ডস হাইয়েস্ট ডোসা পয়েন্ট। এখানে একটি জিনিস বিশেষ করে বলে রাখা দরকার যেটি হচ্ছে যেহেতু এই সমস্ত জায়গাগুলিতে ইন্ডিয়ান আর্মি থাকে সেই জন্য এই সব জায়গায় ক্যামেরা বা ভিডিও করা একেবারেই অ্যালাউড নয়। যাই হোক আমরা সবাই মিলে উঠতে থাকলাম গুরুদংমার এর উদ্দেশ্যে।

পাহাড়ের অজস্র পথ পেরিয়ে এবং কিছু কিছু রাস্তা যেখানে খুবই খারাপ ছিল দক্ষতার সাথে পার করে আমরা এসে পৌঁছালাম ফিফটিন থাউজেন্ড ক্যাফেতে যেটি ওয়ার্ল্ডের সবথেকে উঁচুতে অবস্থিত ক্যাফে। উল্লেখ্য এইখানে দাঁড়িয়ে অরিজিনাল পারমিট জমা দিতে হয় আবার গুরুদংমার থেকে ফিরে আসার সময় ওই পারমিটটি কারেক্ট করে নিতে হয়। আর্মি অফিসাররা পারমিটটি জমা নিয়ে একটি নাম্বার বলে দেয় সেই নাম্বারটি বেরোনোর সময় গার্ডকে বলতে হয় এবং ফেরার সময়ও গার্ডকে বলতে হয় যে আমি এই নম্বরের গাড়ি নিয়ে উঠেছিলাম আমি আবার ফিরে এসেছি। যাইহোক পারমিটের কাজগুলো সম্পন্ন করার পরে আমার খুবই খিদে পেয়েছিল তো ফিফটিন থাউজেন্ড কাফেতে ঢুকলাম ক্যান্টিন থেকে গরম আলুর চপ এবং কফি খেয়ে পেট ঠান্ডা করলাম। হিমাদ্রি শুধু কফি খেলো আলুর চপ খায়নি। ওর ওয়াইফের জন্য আবার ওখান থেকে স্যুভেনির হিসাবে একটা কফির মগ কিনল এবং নিজের জন্য একটা টি শার্ট কিনল যেটায় গুরুদংমার লেখা।

কফি খেয়ে শরীর গরম করে এবার আমরা বেরিয়ে পড়লাম সোজা গুরুদংমার এর উদ্দেশ্যে। প্রথম কিছুটা ভাঙাচোরা রাস্তা পেরিয়ে পিচ করা খুব ভালো রাস্তা পেলাম। বেশ কিছুটা যাওয়ার পরে দেখতে পেলাম আমাদের অভিষ্ট। গুরুদংমার লেক দেখার জন্য বেশ কিছুটা উপরে উঠতে হবে এবং জায়গাটি পুরো কাঁচা এবং মাটির রাস্তা। প্রসঙ্গত বলে রাখি এই রকম রাস্তায় যখন বাইক বা গাড়ি ওঠে তখন মোমেন্টাম তৈরি করে একেবারে সোজা উঠতে হয় মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে গেলে হবে না মাঝ রাস্তায় দাঁড়ালে যে সমস্যাটি হবে সেটি হচ্ছে গাড়িটি পেছনদিকে আবার গড়িয়ে যেতে থাকে।

উপরে উঠার জন্য অনেকগুলি রাস্তা ধরেই যাওয়া যায় যেগুলি বিভিন্ন গাড়ি বা বাইক গেছে বলে রাস্তাটি তৈরি হয়ে গেছে।

আমি হিমাদ্রীকে আগে যেতে দিলাম। ও ওর নিজের মত একটা রাস্তা ধরে সোজা উপরে উঠে গেল। আমিও আরেকটি আমার নিজের সুবিধামতো রাস্তা দেখে সোজা উপরে উঠে গেলাম।

উপরে উঠেই যখন চারপাশে তাকালাম তখন মনে হলো যে হ্যাঁ এইজন্যেই আমরা এতদূর এসেছি আর 17 হাজার ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে প্রবল ঠান্ডা হওয়া শরীর-মন একেবারে চাঙ্গা করে দিল।

সামনে গুরুদংমার লেক একদম নির্মল স্বচ্ছ নীল রঙের এবং আকাশও একদম পরিষ্কার ছিল তার সাথে সূর্যের কিরণ চারপাশ একেবারে আলোকিত করে রেখেছিল। লেগে পড়লাম প্রচুর পরিমাণে ছবি তুলতে। ওখানে আরো অনেকের সাথে কথা হলো যারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছে।

ছবি তোলার পর্ব সাঙ্গ হলে এবার আমরা ধীরে ধীরে নামতে শুরু করলাম। বলে রাখা ভালো যে গুরুদংমার এর যেহেতু অক্সিজেন কম সেজন্য এখানে অনেকের শ্বাসকষ্ট হতে পারে এবং বেশিক্ষণ থাকা ও এখানে উচিত নয় তাই জন্য আমরা মোটামুটি দশ পনেরো মিনিট মতো থেকে তারপর আবার নামলাম।

কলকাতা থেকে যে কজন আমাদের সাথে ছিল তাদের সাথে দেখা হলো তারা তখন আসছে আমরা তাদেরকে বিদায় জানিয়ে ফিরে আসলাম কারন ওরা গুরুদংমার করে তারপরে কালা পাত্থার বলে একটা জায়গা আছে সেখানে যাবে কিন্তু আমার আর হিমাদ্রির অন্য প্ল্যান থাকার জন্য আমরা আর ওদের সাথে গেলাম না।

নিচে নামার পথে অনেকের সাথেই দেখা হলো যারা উপরে সাহস করে উঠতে পারছে না।

আবার আমরা চলে এলাম ফিফটিন থাউজেন্ড ক্যাফে। সেখানে আর্মি চেকপোষ্টে অরিজিনাল পারমিটটা ফেরত নিলাম। তারপর সোজা লাচেনে আমাদের হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

ফেরার পথে খুব খিদে পেয়ে গেছিল তাই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ভেজ মোমো খেলাম আর দোকানদারের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিলাম। এখানকার সরল মানুষরা তাদের নিত্যদিনকার জীবনযাপন এর সম্বন্ধে আমাদের অনেক তথ্য দিল।

মোমো খেয়ে ফিরে গেলাম লাচেন আমাদের সেই হোটেলে। দুপুরের লাঞ্চ খেয়ে সোজা বেরিয়ে পড়লাম লাচুং এর উদ্দেশ্যে।

লাচুং একটি হোটেল বুক করা ছিল সেখানে দুদিন থাকলাম আর বিশ্রাম নিলাম। তৃতীয় দিনে সকালবেলাতে সমস্ত কিছু লাগেজ পত্র নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম জিরো পয়েন্টের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার পথে আবার চেক পোস্ট পড়লো সেখানে পারমিট দেখালাম। অজস্র আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে পাহাড়ের উপরে উঠতে থাকলাম ওয়াটার প্রশ্ন পেলাম অনেকগুলি এবং সেগুলিতে ভালোমতো জল ছিল। রাইডিং বুটের উপর পর্যন্ত জল উঠেছিল। যদিও ফেরার সময় ওই ওয়াটার ক্রসিং গুলিতে আরো বেশি জল পেয়েছি যত বেলা হচ্ছিল রোদ ওঠার জন্য ওপর থেকে বরফ গলে গিয়ে জলের স্রোত বৃদ্ধি পেয়েছিল। সোজা উঠে থাকলাম এবং পৌঁছে গেলাম জিরো পয়েন্ট উঠে দেখি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত বরফের কুচি গায়ে পড়ছে। প্রচুর গাড়ি এবং প্রচুর লোক এসছে জিরো পয়েন্ট দেখতে। খিদে পেয়েছিল বলে ঝাল সস দিয়ে ভেজ মোমো খেলাম। প্রচুর ছবি তুললাম তারপর নামতে শুরু করলাম। নামার পথে মহাদেব ক্যান্টিন যেটি আর্মিরা চালায় সেখানে গরম সিঙ্গাড়া এবং কফি খেলাম।

এরপর আমরা রওনা দিলাম গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে। মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আবার খুব খিদে পেল এক জায়গায় রেস্টুরেন্টে দাঁড়ালাম সেখানে চিকেন মোমো খেলাম। গ্যাংটক যাওয়ার জন্য বাঁ দিকের একটি রাস্তা ধরে আমরা আবার চলতে শুরু করলাম, যাওয়ার পথে আবার খুব বৃষ্টি শুরু হল। তো এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আবার আমরা রেইনকোট পরে নিলাম। বৃষ্টি পড়ে রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ এবং কাদামাটি রাস্তায় নেমে এসেছে তার মধ্যে দিয়ে আমরা কোনরকমে সাবধানে চালিয়ে গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে সোজা চলতে থাকলাম।

বেলা তখন তিনটে এসে পৌছালাম গ্যাংটক এ একটি হোটেলে আগে থেকে কিছু বুকিং ছিল না হোটেলে এসে কথা বললাম দেখলাম জায়গা আছে এবং হোটেল ভাড়াও সাধ্যের মধ্যেই। আর বেশি অন্য হোটেল দেখার জন্য ঘোরাঘুরি করলাম না এমনিতেই সমস্ত কিছু বৃষ্টির জলে ভিজে গেছে সপসপ করছে আমরা ওই হোটেলেই ঢুকে পড়লাম এবং সমস্ত ভিজে জ্যাকেট প্যান্ট জামা পত্র ছেড়ে শুকাতে দিলাম।

ভালো করে গরম জলে স্নান করে ফ্রেশ হলাম। খিদে পেয়েছিল খুবই কিন্তু এই হোটেলে আমরা কিছু না খেয়ে সোজা বেরিয়ে পড়লাম গ্যাংটকের এমজি মার্গ মার্কেটের উদ্দেশ্যে। বাইক গুলোকে হোটেলেই রাখলাম কারণ এখানে ট্যাক্সিভাড়া সস্তা পড়ে এবং বাইক রাখার জায়গা পাবো কিনা সেই সমস্ত কিছু বিচার বিবেচনা করে আমরা ট্যাক্সিতে করে যাওয়াই স্থির করলাম।

এমজি মার্গ মার্কেটে পৌঁছে একটা ভালো রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম আমার পেটে ভালো করে দানাপানি দিলাম। এরপর মার্কেটটা বেশ ভালো করে ঘুরলাম তারপরে শরীর ক্লান্ত ছিল বলে আমরা আবার হোটেলে ফিরে গেলাম।

রাত্রে অল্প কিছু খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লাম পরের দিন সকালে উঠে ট্যাক্সি ধরে দেওড়ালি বলে একটি জায়গায় পৌঁছালাম। এইখানে দ্রষ্টব্য বলতে একটি রোপওয়ে আছে যেটি শহরের উপরে কিছুটা অংশ ঘুরিয়ে দেখায়। হিমাদ্রি বলল আমরা এত পাহাড়ের উপরে উঠেছি আর এই রোপওয়েতে চড়তে ভালো লাগছেনা চলো অন্য কোথাও যাই। তো সামনেই দেখলাম ইনস্টিটিউট অফ টিবেটোলজি। কুড়ি টাকা করে টিকিট কেটে ঢুকে পড়লাম সেখানেই। ভেতরে প্রচুর দেখার জিনিস আছে কিন্তু ফটোগ্রাফি নিষিদ্ধ আমরা ভাল করে ঘুরে ঘুরে দেখলাম এটি একটি মিউজিয়াম এখানে প্রাচীন পুঁথি/থাঙ্কা এবং অন্যান্য জিনিস আছে। প্রচুর কিছু জানতে পারলাম এবং খুবই ভালো লাগলো এই মিউসিয়ামটি দেখে। দেখা হয়ে গেলে এবার আমরা ফিরে চললাম এমজি মার্গ মার্কেটের উদ্দেশ্যে। আগে দুপুরের লাঞ্চ করলাম তারপরে ওই মার্কেটে ঘুরে কিছু বাড়ির জন্য নিয়ে যাওয়ার মতো জিনিসপত্র কিনলাম। এরপর ট্যাক্সি ধরে ফিরে আসলাম হোটেলে। গ্যাংটকের অপরূপ সৌন্দর্য আমাদেরকে বিমোহিত করেছিল মনে হচ্ছিল আরও কদিন এখানেই থেকে যাই। কিন্তু উপায় নেই হাতে সময় কম তো পরের দিন সকালে আমরা হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে করলাম ত্রিবেণী রিভার ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে। প্রসঙ্গত বলে রাখি ত্রিবেণী রিভার ক্যাম্প হচ্ছে একটি জায়গা যেখানে তাঁবু খাটানো আছে একটু নদীর পাশে জায়গা এবং খুবই সুন্দর শীতকালে যাওয়ার পক্ষে আদর্শ। আগের দিন গ্যাংটকের হোটেলে বসে আমরা হঠাৎ করেই ঠিক করেছিলাম যে এই ত্রিভেনি রিভার ক্যাম্পে একদিন অন্তত থাকবো।

গ্যাংটক থেকে সোজা নেমে গেলাম ত্রিবেণী রিভার ক্যাম্পে পৌঁছে দেখি সেখানে প্রচুর তাঁবু খাটানো আছে কিন্তু সেরকম লোকজন ছিল না খুবই কম লোকজন এসেছে যেহেতু এই সময়টি ঠিক ত্রিবেণীতে থাকার জন্য উপযুক্ত নয়। গ্যাংটকের হোটেল থেকেই একজনের ফোন নাম্বার পেয়েছিলাম এখানে তাঁবু বুকিং করার জন্য তাকে ফোন করে কিছু অ্যাডভান্স বুকিং করে তারপরে আমরা এখানে এসে পৌঁছেছি। তাঁবুতে এসে জিনিসপত্র রেখে নদীর জলে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তাঁবুর সামনে বড় ছাতা খাটিয়ে দিয়েছিল সেখানে চেয়ার পেতে নদীর জল দেখতে দেখতে আর ঠান্ডা হাওয়া খেতে খেতে মন যেন কোথায় উদাস হয়ে গেল।

কখন যেন দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমাদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ছেলেটি এসে বারবিকিউ চিকেন এর ব্যবস্থা করল। আমাদের সামনেই কাঠের আগুনে বারবিকিউ চিকেন রান্না করলো। নদীর স্রোতের জলের শব্দ শুনতে শুনতে জ্যোৎস্নারাতে সেই বারবিকিউ চিকেন খাওয়া এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। রাত্রের খাবার আমাদের জন্য ভাত চিকেন কারি সবজি এবং পাপড় দিয়ে গেল। খেয়ে নিয়ে শুয়ে পড়লাম কারণ পরের দিন সকালে আমাদেরকে আবার শিলিগুড়ি ফিরে যেতে হবে।

পরের দিন সকালে অল্প একটু ম্যাগি আর চা খেয়ে ত্রিবেণী রিভার ক্যাম্পকে বিদায় জানিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে বাইকগুলি ফেরত দিতে।

পাহাড় থেকে নেমে আসার পথে বারবার মনে হচ্ছিল আরো কটা দিন যদি এখানে থেকে যেতে পারতাম খুবই ভালো হতো। কিন্তু উপায় নেই কলকাতার অফিস ও পরিবার সবাইকে সামলাতে হবে। যাইহোক শিলিগুড়ি আমরা নেমে এলাম মিত্তাল গার্ডেন নামের একটি হোটেলে এসে উঠলাম। হিমাদ্রি বললো চলো হংকং মার্কেটে যাই ওখানে জিনিসপত্র সস্তা পড়ে তো একটা বাইক নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম হংকং মার্কেট এর উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়ে কিছু ছোটখাটো জিনিস কেনাকাটা করলাম। ফিরে এসে হোটেলে লাঞ্চ করে বিকাল বেলায় আমরা বাইকগুলি জমা দিতে গেলাম। বাইক জমা দিয়ে আবার হোটেলে ফিরে এসে জিনিসপত্র নিয়ে একটি টোটো বুক করে চলে গেলাম তেনজিং নোরগে বাস স্ট্যান্ড। আমাদের আগে থেকে ট্রেন বুক করা ছিল কিন্তু আসামের বন্যার জন্য ব্যান্ডেল লাইনের সমস্ত ট্রেন ক্যান্সেল হয়ে গেছিল তো সেজন্য আমাদের ট্রেনও ক্যান্সেল হয়ে গেছিল তাই আমরা আগের দিন রাত্রেই গ্রীনলাইন বাস বুক করে নিয়েছিলাম। সন্ধ্যে সাড়ে সাতটার সময় বাস ছাড়লো এবং পরেরদিন সকালে সাতটার মধ্যেই কলকাতার এসপ্লানাড বাস টার্মিনালে পৌঁছে গেলাম। হিমাদ্রি বাড়িতে আগে থেকে বলে রেখেছিল ওর ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে এসেছিল আমায় আমার বাড়ি অবধি ছেড়ে দিয়ে আবার নিজের বাড়ি ফিরে গেল।

অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের এই সফরটিতে। পাহাড়ের চড়াই-উতরাই রাস্তা, রাস্তার বাঁক, গভীর কাদা, ভাঙাচোরা রাস্তা, ভালো রাস্তা, জল, বৃষ্টি, গরম, ঠান্ডা সবই আমরা পেয়েছি। নামার সময় যেন পাহাড় হাতছানি দিয়ে বললো আবার আসিস। পাহাড়ের এই ডাক উপেক্ষা করা যায় না আবার হয়তো কখনো কোন সময় বেরিয়ে পড়বো পাহাড়ের কোলে ফিরে যেতে আর প্রাকৃতিক নৈসর্গ এবং সৌন্দর্যতায় নিজেকে সঁপে দিতে।

Tags: bike ridebikingGurudongmarlakeRoyal EnfieldSikkimtravel
Previous Post

Bhimbetka cave painting ভীমবেটকা

Next Post

Lightening awareness বাজ পড়ে মানুষের মৃত্যুর সচেতনতায় গ্রামের গৃহবধূ জয়িতা

Next Post

Lightening awareness বাজ পড়ে মানুষের মৃত্যুর সচেতনতায় গ্রামের গৃহবধূ জয়িতা

Comments 1

  1. Sk ZIAUL Rahman says:
    4 months ago

    অসাধারণ লাগলো পড়ে, পড়তে পড়তে একসময় মনে হচ্ছিল পুরো ব্যপার যেন চোখের সামনে ঘটছে….

    Reply

Leave a Reply to Sk ZIAUL Rahman Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

হরফ

1.8k Views
April 11, 2025

The story of Metiabruz and Nawab Wajid Ali Shah নবাবী মেটিয়াবুরুজের গল্প

1.8k Views
February 24, 2025

Denmark Tavern / শ্রীরামপুরের ডাচ আস্তানায়

1.9k Views
February 24, 2025
প্রথম দেখা

Copyright (c) 2022 by Prothom Dekha Web Journalism.

Navigate Site

  • হোম
  • আমাদের কথা
  • যোগাযোগ

Follow Us

No Result
View All Result
  • হোম
  • সমসাময়িক
  • বিজ্ঞান
    • প্রযুক্তি
    • স্বাস্থ্য
    • অন্যান্য
  • পরিবেশ
    • সুন্দরবন
    • জলবায়ু পরিবর্তন
    • অন্যান্য
  • শিল্প সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • মুখোমুখি
    • অন্যান্য
  • মেলা ও উৎসব
    • কলকাতার উৎসব
    • অন্যান্য
  • ভ্রমণ
  • হেঁশেল
bn Bengali▼
X
ar Arabicbn Bengalizh-CN Chinese (Simplified)nl Dutchen Englishfr Frenchde Germanit Italianpt Portugueseru Russianes Spanish

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password? Sign Up

Create New Account!

Fill the forms below to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist