১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন তারাপদ ব্যানার্জি প্রথম জীবনে তিনি রাইফেল শুটার হিসেবে পরিচিত ছিলেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বেঙ্গল সহ ভারতের বেশ কিছু প্রতিযোগিতাতে।
১৯৬০ সাল নাগাদ সিনেমার জগতের ছবি দিয়ে কলকাতা শহরে চিত্র সাংবাদিকতাতে প্রবেশ। তারপর আনন্দবাজার পত্রিকায় ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার। ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে তারাপদ ব্যানার্জি আনন্দবাজার পত্রিকায় স্টাফ ফটোগ্রাফার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি প্রথম ওয়াইড অ্যাঙ্গেল দিয়ে নিউজ ফটোগ্রাফি শুরু করেন করেন কলকাতার চিত্র সাংবাদিকতা জগতে। তখন তিনি ব্যবহার করতেন মিনলটা-এসএফটি সুপার ক্যামেরা ২৮ মিলিমিটার লেন্স। পরবর্তীকালে লাইকা ব্যবহার করতেন। তখন মূলত সব চিত্রসাংবাদিকরা রোলি ফ্লেক্স 120 ক্যামেরায় ছবি তুলতেন। কলকাতা শহরকে পাঠকদের ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে পরিচিত করান তারাপদ ব্যানার্জি। গতানুগতিক সীমাবদ্ধ গণ্ডি থেকে এক বিস্তৃত ছবি যা সংবাদপত্রে পাঠকদের খুবই ভালো লাগতে শুরু করে। বাংলাদেশ যুদ্ধের অসাধারণ সব ছবি উপহার দেন পাঠকদের। ছবি তোলেন ঢাকায় মুজিবর রহমানের মৃত্যুর সময়ও। উত্তম কুমারের সঙ্গে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তার । ধুতি পরা উত্তম কুমারের এক অসাধারণ ছবি ওনারই তোলা ছিল যা আজও সুপ্রিয়া দেবীর বাড়িতে আছে।
সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অসাধারণ। সত্যজিৎ রায় ছবি তোলার পরে কন্টাক্ট সিট নিয়ে ওনাকে দেখাতে আসতে হতো। সত্যজিৎ রায় প্রত্যেকটি ছবি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতেন ও প্রশংসা করতেন। ওনার উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে প্রিন্স চার্লস হাত জোড় করে নমস্কার জানাচ্ছেন ও জ্যোতি বসু হ্যান্ডসেখ করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বিমানবন্দরে তোলা ছবি। হাজরাতে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে যখন মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন সেই সময় উনিও ভীষণভাবে আহত হন ছবি তুলতে গিয়ে। হাত ভেঙে যায় ও ক্যামেরাটা সম্পূর্ণ ভেঙে দেয় গুন্ডারা। এল কে আদবানী গ্রেফতার হয়ে গেস্ট হাউসে বন্দি অবস্থায় ছবি। তাঁর ছিল দুর্ধর্ষ ক্যানডিড ছবি তোলার ক্ষমতা, যা সত্তরের দশকের চিত্রসাংবাদিকতাকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিল।