জয়ন্ত সাউ
মণিপুর নামটা শুনলেই এখন দেশের পুর্ব প্রান্তের পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট রাজ্যটার হিংসার ছবিই ভেসে ওঠে আমাদের চোখের সামনে। কিন্তু এই বাংলার মধ্যেই রয়েছে আরও এক মণিপুর তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
নদীয়ার নবদ্বীপ ধাম মূলত শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান হিসেবেই খ্যাত। এখানে দোলযাত্রা তাঁর আবির্ভাবকে কেন্দ্র করেই পালিত হয়। আর এই নবদ্বীপ ধামেই রয়েছে বাংলার একটুকরো মণিপুর। ১৭৯৮ সালে মণিপুরের মহারাজা রাজকুমারি বিম্বাবতীকে নিয়ে মণিপুর থেকে এই নবদ্বীপ ধামে এসেছিলেন। সেই থেকেই দেশের ঐ পুর্ব প্রান্তের পাহাড় ঘেরা রাজ্যটির সঙ্গে এই বাংলার যোগসূত্র। দোল উপলক্ষে কয়েকশো শতাব্দী ধরে মণিপুরের মানুষরা এখানে এসে জমা হন। রাজবাড়িতে পালিত হয় মণিপুরী দোল উৎসব। রীতিনীতি পালিত হয় সব মণিপুরী নিয়মেই। নবদ্বীপের মহাপ্রভুর মন্দিরে শুধুমাত্র তাঁর জন্মতিথিতেই দোল পালিত হয় মহাপ্রভুর চরণে আবিরের প্রয়োগে পুজোর উপাচারের অঙ্গ হিসেবে কিন্তু শতাব্দী প্রাচীন মণিপুর রাজবাড়ির অণুমহাপ্রভু মন্দিরে দোল উৎসব সাত দিন ধরে চলে। মণিপুরী নৃত্যগীতের আসর বসে রাজবাড়ির নাট মন্দিরে। হরিভক্তি বিলাস গ্রন্থ অনুসরণে এখানে দোল পালিত হয়। দোলের আগের দিন পালিত হয় দিবা রাস এবং আবির খেলা; তাদের রীতি মেনে মূল দোল উৎসবের দিন সন্ধ্যায় পোড়ানো হয় মহাপ্রভুর আঁতুর ঘর, এটিই এখানকার ন্যাড়া পোড়া রীতি। দোলের পরদিন হয় পিচকারি দোল।