আনন্দের শহর কলকাতা তাই তার আরেক নাম ‘সিটি অফ জয়’। আর সেই কলকাতারই বুকে হোলির কয়েকদিন আগেই উঠে আসে একটুকরো বৃন্দাবন। বিগত ১৩৭ বছর ধরে কলকাতার বড়বাজারের মাড়োয়ারি সোসাইটির উদ্যোগে, দোলের কয়েকদিন আগে হাওড়ার সত্যনারায়ণ মন্দিরের স্বয়ং সত্যনারায়াণ জী ১৯২১ সালের একটি রোলস রয়েসে চড়ে আসেন কলকাতার বড়বাজারের সত্যনারায়ণ মন্দিরে। বাগেলাদের পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে এই রীতি চলে আসছে। তাদের মালিকানাধীন এই রোলস রয়েস সিল্ভার ঘোস্ট ১৯২১ এই ভিন্টেজ গাড়ীটির বয়সও একশো। আর বিগত একশো বছর ধরে এই গাড়ীতে করেই আসেন ভগবান সত্যনারায়ণ। ফুল দিয়ে সাজানো হয় গাড়িটিকে। সঙ্গে থাকে একটি কাঠের রথও। বছরে তিন দিনই এই গাড়িতে চড়ে বের হন দেবতা। হাওড়া ব্রীজ পেড়িয়ে চলে আসেন কালাকার স্ট্রীটের মন্দিরে। হাওয়ায় নানান রঙের রঙিন আবির ছুঁড়ে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে আনা হয় দেবতাকে। বড়বাজারের সোনাপট্টির ব্যাবসায়ীরাও অংশ নেন বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রায়। টুইন সিটির মানুষ রাস্তার দুধারে ভিড় জমান এই শোভাযাত্রা দেখতে। ব্যাস্ত হাওড়া ব্রীজ মুখরিত হয়ে ওঠে কাঁসর ঘন্টায়। ফুলের পাপড়ি আর রঙিন আবিরে রাঙিয়ে তোলা হয় সত্যনারায়ণ জীর এই যাত্রাপথ। লাল, নীল, হলুদ, কমলা রঙের শুকনো রঙ আর আবিরের ধোঁয়ায় ঢেকে যায় বড়বাজারের সোনাপট্টি। সেইসাথে চলে কাঁসর ঘন্টা, ডাবলি বাজিয়ে ভক্তদের নাচ গান; শহর কলকাতার রাজপথ এই একদিনের জন্য যেন রাধা কৃষ্ণের বৃন্দাবন হয়ে ওঠে। এক অপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী থাকে কলকাতা।