“লুটিয়ে পড়ে জটিল জটা, ঘন পাতার গহন ঘটা, হেথায় হোথায় রবির ছটা, পুকুর ধারের পট। দশদিকেতে ছড়িয়ে শাখা, কঠিন বাহূ আঁকাবাঁকা, স্তব্ধ যেন আছে আঁকা ছিঁড়ে আকাশ পট”।
রবি ঠাকুরের লেখা এই কবিতা আজ অনেকেরই হয়তো আর মনে নেই; কিন্তু আমাদের আশেপাশে ছোটো থেকে দেখে আসা বহূদিন পুরোনো কোনো বটগাছ হঠাৎ নেই দেখলে মনটা কেমন করে ওঠে। একটা সাধারণ বটগাছ কিন্তু তাকে ঘিরে পরিবেশের বাস্তুতন্ত্র যেমন রক্ষা পায় তেমনই তৈরী হয় অনেক গল্প অনেক স্মৃতি, সময়ের সাথে যা ঐ বটের শিকড়, ডালপালা আর ঝুড়ির মতোই প্রাচীন হয়ে ওঠে; কালের গহনে আমরা স্মৃতিভ্রংশ হলেও বটের ঝুড়ি চলে যায় মাটির গভীরে, আরও শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় কালকে। হায় নিষ্ঠুর মানুষ নির্দিধায় কুঠারের ঘায়ে কেটে ফেলে কাল সময় ধরে রাখা সেই বটকে। জয়িতা কুন্ডু হাওড়ার উলুবেড়িয়ার প্রত্যন্ত এক গ্রামের গৃহবধূ । তার লড়াই পরিবেশকে রক্ষা করা। এই সমস্ত প্রাচীন বট যেগুলো আজ হঠাৎই হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবন থেকে তাদের রক্ষা করা স্বার্থপর মানুষের হাত থেকে। সেই স্বপ্ন নিয়েই জয়িতা মানুষের সচেতনতা বাড়াচ্ছে এলাকার পুরোনো বটগাছ রক্ষা করতে, তাদের যত্ন করে বাঁচিয়ে রাখতে। আমাদেরও উচিত জয়িতার স্বপ্নপূরণে তাকে সাহায্য করা, আর পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নিজেদের সচেতন হওয়া।